অ্যালেনবেরী'র ডিজাইন অফিসে আমাদের সহকর্মী - গণেশ ঘোষ এর ছেলে শ্রীমান সৌম্য ১৯৯২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান পেয়েছিলো - সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে বরাবর ক্লাস ওয়ান থেকে প্রথম হ'ত - এই বার জীবনে প্রথমবার - দ্বিতীয় হ'ল । আমরা গত ১৪ বছর ধরে গণেশদা'র পারিবারিক চিত্র পেয়ে আসছি, কাজেই সবাই ঠিক করলাম শ্রীমান কে আমাদের অফিসে একদিন সংবর্ধনা জানাবো । সবাই মিলে চাঁদা তুলে - বিরাট একটা মিষ্টির প্যাকেট ও মোটামুটি ভালো অঙ্কের একটা গিফট চেক দেবো - ঠিক হল । সংবর্ধনার দিন আমাকে কয়েকজন ধরল - শ্রীমান সৌম্যর নামে একটা অভিনন্দন - পত্র লিখে দিতে । আমিও সোৎসাহে একটা লিখে ফেললাম (বসের চোখ বাঁচিয়ে)
-------------------------------------------------------------------------
মুখচোরা এক লাজুক ছেলে - সৌম্য তাহার নাম,
ভবানীপুর - নন্দন রোড - বিশ নম্বর ধাম ।
দশটি বছর চুপি চুপি - স্কুল গেল আর এলো,
পাড়ার লোকে জানতোনা তার মনেতে কি ছিল ।
জুলাই মাসের সাত তারিখে কাগজ হাতে পেয়ে -
চমকে ওঠে পাড়ার যত ছেলে, বুড়ো, মেয়ে,
এই ছেলেরই ছবি যেন প্রথম পাতার 'পরে -
বিশ্বাসই যে চায়না হ'তে - থাকে কাগজ ধরে ।
শান্ত ছেলের সলাজ হাসি - চশমা পরা মুখ,
খবর পড়ে গর্বে সবার - উঠল ভরে বুক -
মাধ্যমিক-য়ে দ্বিতীয় স্থান, সঙ্গে আটটা 'লেটার' !
মা ও বাবার অবস্থাটা - ভাবুন শুধু এবার ।
আগের দিনই কাগজের লোক দিয়েছিলো হানা,
পরের দিনেও আবার তারা করলো আনাগোনা ।
আত্ম-স্বজন নিলো যে খোঁজ - যে যেখানে ছিল,
তারা ছাড়াও চেনাজানা - অনেক লোকই এলো ।
অ্যালেনবেরীর অফিসেতে আমরা ক'জন ছাড়া -
চিনতো না কেউ 'গণেশ ঘোষ' - য়ে, এমনি তাঁর ধারা ।
শান্ত মানুষ, নির্বিরোধী - সদাই করেন কাজ,
মুখে তাঁহার স্মিত হাসি - আজকে পেলেন লাজ ।
সবাই যখন এসে তাঁকে - হাত মিলিয়ে গেল -
আত্মপ্রচার-বিমুখ তিনি - চোখেতে জল এলো ।
সলাজ মুখে বলেন তিনি - "কৃতিত্ব নেই আমার,
ছেলের মায়ের আত্মত্যাগের মূল্য পেলাম এবার ।
দশটি বছর নাওয়া খাওয়া - নেই বললেই চলে,
ছেলে নিয়েই ব্যস্ত তিনি - বাড়ীর সবাই বলে ।
ছেলেমেয়ের পড়াশুনা, ভালমন্দ নিয়ে -
কাটাচ্ছে দিন গিন্নি আমার - সংসার সামলিয়ে ।
ছোট্ট আমার মেয়েটাও তো দাদার নেওটা ভারী,
দাদার সাথে তুলবে ছবি - বসলো তাড়াতাড়ি ।
কাগজের লোক মজা পেয়ে বলল তখন হেসে -
দাদার ছবিই নেব শুধু - সরে বোসো পাশে।"
আমরা সবাই করছি আশা - সামনে ভবিষ্যতে,
সৌম্য বাবু গড়গড়িয়ে - চলবে বিজয়-রথে ।
মা ও বাবার সাথে মোরাও অনেক আশা নিয়ে -
রইব চেয়ে - সুস্থ দেহে চলো এগিয়ে ।।
(৯ -৭ - ১৯৯২ )
-------------------------------------------------------------------------------------------
Contributed by: Debkisor Chakrabarti / 20 May 2015
-------------------------------------------------------------------------
|| কল্যাণীয় সৌম্য ঘোষের অভিনন্দন ||
মুখচোরা এক লাজুক ছেলে - সৌম্য তাহার নাম,
ভবানীপুর - নন্দন রোড - বিশ নম্বর ধাম ।
দশটি বছর চুপি চুপি - স্কুল গেল আর এলো,
পাড়ার লোকে জানতোনা তার মনেতে কি ছিল ।
জুলাই মাসের সাত তারিখে কাগজ হাতে পেয়ে -
চমকে ওঠে পাড়ার যত ছেলে, বুড়ো, মেয়ে,
এই ছেলেরই ছবি যেন প্রথম পাতার 'পরে -
বিশ্বাসই যে চায়না হ'তে - থাকে কাগজ ধরে ।
শান্ত ছেলের সলাজ হাসি - চশমা পরা মুখ,
খবর পড়ে গর্বে সবার - উঠল ভরে বুক -
মাধ্যমিক-য়ে দ্বিতীয় স্থান, সঙ্গে আটটা 'লেটার' !
মা ও বাবার অবস্থাটা - ভাবুন শুধু এবার ।
আগের দিনই কাগজের লোক দিয়েছিলো হানা,
পরের দিনেও আবার তারা করলো আনাগোনা ।
আত্ম-স্বজন নিলো যে খোঁজ - যে যেখানে ছিল,
তারা ছাড়াও চেনাজানা - অনেক লোকই এলো ।
অ্যালেনবেরীর অফিসেতে আমরা ক'জন ছাড়া -
চিনতো না কেউ 'গণেশ ঘোষ' - য়ে, এমনি তাঁর ধারা ।
শান্ত মানুষ, নির্বিরোধী - সদাই করেন কাজ,
মুখে তাঁহার স্মিত হাসি - আজকে পেলেন লাজ ।
সবাই যখন এসে তাঁকে - হাত মিলিয়ে গেল -
আত্মপ্রচার-বিমুখ তিনি - চোখেতে জল এলো ।
সলাজ মুখে বলেন তিনি - "কৃতিত্ব নেই আমার,
ছেলের মায়ের আত্মত্যাগের মূল্য পেলাম এবার ।
দশটি বছর নাওয়া খাওয়া - নেই বললেই চলে,
ছেলে নিয়েই ব্যস্ত তিনি - বাড়ীর সবাই বলে ।
ছেলেমেয়ের পড়াশুনা, ভালমন্দ নিয়ে -
কাটাচ্ছে দিন গিন্নি আমার - সংসার সামলিয়ে ।
ছোট্ট আমার মেয়েটাও তো দাদার নেওটা ভারী,
দাদার সাথে তুলবে ছবি - বসলো তাড়াতাড়ি ।
কাগজের লোক মজা পেয়ে বলল তখন হেসে -
দাদার ছবিই নেব শুধু - সরে বোসো পাশে।"
আমরা সবাই করছি আশা - সামনে ভবিষ্যতে,
সৌম্য বাবু গড়গড়িয়ে - চলবে বিজয়-রথে ।
মা ও বাবার সাথে মোরাও অনেক আশা নিয়ে -
রইব চেয়ে - সুস্থ দেহে চলো এগিয়ে ।।
(৯ -৭ - ১৯৯২ )
-------------------------------------------------------------------------------------------
Contributed by: Debkisor Chakrabarti / 20 May 2015
No comments:
Post a Comment