---------------------- উজ্জ্বল সেনগুপ্ত সংকলন – অগাস্ট, ২০১৫ ----------------------
|| মনে এলো, তাই ||
মায়ের কথা পড়ছে কিছু মনে –
কবে যে মা গেছে আমায় ছেড়ে –
লাল সিঁদুরের গোল সে বড় টিপ
জ্বলছিলো তার ফর্সা কপাল জুড়ে !
ঘোমটা দেওয়া মুখ দেখেছি কম –
সকাল থেকে সন্ধ্যা, কাজের মাঝে,
ঘর, বারান্দা, দাওয়া, হেঁসেল নিয়ে
বিশ্রাম তার ভাগ্যে ছিলো না যে !
পেতাম আমি আদর তারই বেশী,
কোন কিছু পড়তো না যে বাদ –
চিঁড়ে, মুড়ি, দুধ-কলা ও খই,
জলখাবারের কি অমৃত স্বাদ !
দুপুরেতে ডাল-ভাত-তরকারি –
হলুদ-জিরের হালকা মাছের ঝোলে,
তৃপ্তি করে আয়েস করে খেয়ে
ঘুমিয়ে যেতাম মায়ের স্নেহের কোলে !
এখন জোটে বাসি আটার রুটি,
সকালবেলা এই তো জলযোগ –
সন্ধ্যাবেলা কি খাই, কি খাই করি,
পাই না কিছুই, এ যে কি দুর্ভোগ !
কালের সাথে একটা জীবন, হায়
কোথা থেকে কোথায় চলে যায় –
মায়ের সাথে করবো দেখা তাই,
এ ক’টা দিন তারই প্রতীক্ষায় !
- ২ অগাস্ট, ২০১৫
-----------------------------------------------------------------------------
|| প্রার্থনা ||
প্রভু, তুমি যেখানেতেই থাকো,
হতে পারে শত যোজন দূর –
বিশ্বাস মোর থাকবে অটুট জেনো,
তোমার প্রেমেই হৃদয় যে ভরপুর !
তোমার কাছে চাই বা যদি কিছু,
কঠিন হবে আমার যে সে চাওয়া –
তোমায় আমি বলবো কি আর আজ ?
না চাইলেও যায় যে সবই পাওয়া !
চিত্তে আমার জ্বালিয়েছো যে আলো –
আঁধার বলে আর কিছু যে নাই –
গাইবো আমি তোমারই বন্দনা,
চারিদিকে যে শুধুই রোশনাই !
দুঃখ-কষ্ট যতই আসুক ঘিরে ,
গহীন কালো কৃষ্ণঘন রাতি -
বাড়িয়ে দিয়ে দু’হাত তোমার তরে,
গাইবো শুধুই তোমার মহান স্তুতি !
তোমার বাণী আমার হৃদয় জুড়ে,
অনুভবে সদাই সত্যময় –
সদাই আমি অন্তরে অন্তরে,
এ প্রাণ ভরে’ গাইবো তোমার জয় !
তোমার অভিলাষের কাঙ্গাল আমি,
আমার তরে কি তব নির্ণয় !
কেমন করে চলবো জীবন-পথে ,
জানি না তা, হে করুণাময় !
থাকবো আমি তোমার চরণতলে –
চিরদিনই গাইবো তোমার জয়,
যেমন যেমন দিক দেখাবে তুমি
তাই তবে হোক, হে মহাজ্যোতির্ময় !!
- ৩ অগাস্ট, ২০১৫
-------------------------------------------------------------------------
|| সাত-সতেরো ||
নিত্য আমার চিত্ত জুড়ে বৃত্ত আঁকি,
অমল মনে কমল-বনের ছবি দেখি –
স্বপ্নমদির গন্ধবিধুর রাতের প্রহর,
কল্পনাতে নিশীথে ঐ জাগছে শহর !
রঙিন আলো ছিটকে ছড়ায়, আঁধার কোথায় ?
ফুলঝুরি না রংমশাল, কে বলবে গো তায় ?
হালকা হাসি, অট্টহাসি, শুনতে যে পাই –
গুনগুনিয়ে, গলা ছেড়ে গান গাওয়া চাই ।
সাত বুড়োতে মৌজ করে আড্ডা জমায়,
ধিন কেটে তাক, তাক তেরে তিন, তিন তেরে, হায় !
গানের সুরে, নাচের তালে ভুলছে সবই –
এদের মাঝে আছে সে এক জ্যান্ত কবি !
এক যে বলে, ওরে ও দুই, দেখতে পেলি ?
তিন-চারেতে লাফিয়ে ওঠে – আনারকলি ?
কোথায়, কোথায়, কোনদিকেতে, বল না মোরে –
ডানদিকে না বাঁয়ে, দাঁড়া একটু সরে ।
সাত যে কবি, বলে তখন পাঁচ আর ছয়ে,
তোরা কিছু বলবি কি ভাই, আমার হয়ে ?
আড্ডার নেই মুণ্ডু-মাথা, সব খিচুড়ি –
আগে-পিছে যাচ্ছে কে ভাই, নতুন কুঁড়ি ?
এমন করে বললে রে ভাই, কি আর করি ?
ইচ্ছে জাগে, উলটো করে পাকড়ে ধরি !
রোজ যেমনই, আজ তেমনই, এরকমটা বেশ –
ভোর হলো যে, রাতের এবার হলো যে শেষ !
- ৬ অগাস্ট, ২০১৫
----------------------------------------------------------------------------------------
Contributed by: Ujjwal Sengupta in WaaS / August, 2015
No comments:
Post a Comment