|| চিড়িয়াখানার অন্দরে ||
গতকাল চিড়িয়াখানা ঘুরে এলাম । অনেকদিন থেকেই যাবার ইচ্ছা ছিল । নানা কাজের জন্যে সময় করে উঠতে পারছিলাম না । অবশেষে গতকাল চলেই গেলাম । সেই কোন ছোটবেলায় এসেছিলাম । অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে । ঘুরতে ঘুরতে এলাম বাঘের খাঁচার কাছে । বাঘটা গুটিসুটি মেরে শুয়েছিল ভেতরে । আমাকে দেখে উঠে এলো । তারপর আড়মোড়া ভেঙ্গে একটা মস্ত হাই তুলে বলল, কেমন আছ ? আমাকে দেখে কি তোমার বাঘ বলে মনে হচ্ছে ? আসলে আমি কিন্তু শিয়াল । চিড়িয়াখানায় বাঘের আকাল হতে বনগাঁ থেকে আমায় ধরে এনে বাঘ সাজিয়ে রেখেছে । আগে ছিলাম ফেউ, এখন বাঘ হয়ে গেছি । ভালোই আছি ।
আমি বললাম ধ্যূত, তা আবার হয় নাকি ? হয় হয়, সব হয়, পাশের খাঁচায় জাল ধরে বসে থাকা হনুমানটা খ্যাঁক খ্যাঁক করে হেসে বলে । কেন হবে না ? এইতো আমি হয়েছি । আগে আমি ছিলাম কাঠবিড়ালি । করে দিল হনুমান । ভালোই হয়েছে । বাঘটাকে কেউ খেতে দেয় না, আমাকে দেয় । জালের উপর দিয়ে কলা, পাউরুটি, বাদামের প্যাকেট ছুঁড়ে দেয় । ভালোই লাগে ।
--দূর, তোমরা সব মিথ্যে কথা বলছ । এটা হতে পারে না ।
--পারে গো পারে । আচ্ছা বলত, তোমাকে কতবার জানোয়ার হতে হয়েছে ?
--আমাকে ?
--হ্যাঁ গো তোমাকে । তোমাকে কি কেউ কোনদিন গাধা, গরু, বাঁদর, ছুঁচো বলে নি ?
--হ্যাঁ বলেছে, কিন্তু তাতে কি ?
ডান দিকের খাঁচায় একটা শিম্পাঞ্জী । আমাদের কথাবার্তা শুনে আস্তে আস্তে এগিয়ে এলো ।
--আমি বংশী, শিম্পাঞ্জী সেজে আছি । আগে অটো চালাতাম । এখন চিড়িয়াখানায় ১০টা ৫টা ডিউটি । মাস মাইনে ৫০০০ টাকা । সব কেটে কুটে হাতে পাই সাকুল্যে ১৫৭৫ টাকা । আর টিফিনটা তো তোমরা যা দাও, তাতেই হয়ে যায় । ছুটির দিনে একটু বেশী খাবার পেলে, বাড়ির ছেলে-মেয়ে বৌটার জন্যে নিয়ে যাই । ভালোই আছি । সামনে মাসে একটা ইনক্রিমেন্ট হবার কথা আছে । দেখি কতটা বাড়ে । দাও এখন, কি খাবার আছে তোমার কাছে । বড্ড খিদে পেয়েছে ।
আমি দৌড়ে পালিয়ে আসি ওখান থেকে । অজান্তে একবার নিজের গায়ে হাত বুলিয়ে নিই ... ।
---------------------------------------------------------------------------
Contributed by: 20150430 Aloke Chowdhury / 30 April 2015
গতকাল চিড়িয়াখানা ঘুরে এলাম । অনেকদিন থেকেই যাবার ইচ্ছা ছিল । নানা কাজের জন্যে সময় করে উঠতে পারছিলাম না । অবশেষে গতকাল চলেই গেলাম । সেই কোন ছোটবেলায় এসেছিলাম । অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে । ঘুরতে ঘুরতে এলাম বাঘের খাঁচার কাছে । বাঘটা গুটিসুটি মেরে শুয়েছিল ভেতরে । আমাকে দেখে উঠে এলো । তারপর আড়মোড়া ভেঙ্গে একটা মস্ত হাই তুলে বলল, কেমন আছ ? আমাকে দেখে কি তোমার বাঘ বলে মনে হচ্ছে ? আসলে আমি কিন্তু শিয়াল । চিড়িয়াখানায় বাঘের আকাল হতে বনগাঁ থেকে আমায় ধরে এনে বাঘ সাজিয়ে রেখেছে । আগে ছিলাম ফেউ, এখন বাঘ হয়ে গেছি । ভালোই আছি ।
আমি বললাম ধ্যূত, তা আবার হয় নাকি ? হয় হয়, সব হয়, পাশের খাঁচায় জাল ধরে বসে থাকা হনুমানটা খ্যাঁক খ্যাঁক করে হেসে বলে । কেন হবে না ? এইতো আমি হয়েছি । আগে আমি ছিলাম কাঠবিড়ালি । করে দিল হনুমান । ভালোই হয়েছে । বাঘটাকে কেউ খেতে দেয় না, আমাকে দেয় । জালের উপর দিয়ে কলা, পাউরুটি, বাদামের প্যাকেট ছুঁড়ে দেয় । ভালোই লাগে ।
--দূর, তোমরা সব মিথ্যে কথা বলছ । এটা হতে পারে না ।
--পারে গো পারে । আচ্ছা বলত, তোমাকে কতবার জানোয়ার হতে হয়েছে ?
--আমাকে ?
--হ্যাঁ গো তোমাকে । তোমাকে কি কেউ কোনদিন গাধা, গরু, বাঁদর, ছুঁচো বলে নি ?
--হ্যাঁ বলেছে, কিন্তু তাতে কি ?
ডান দিকের খাঁচায় একটা শিম্পাঞ্জী । আমাদের কথাবার্তা শুনে আস্তে আস্তে এগিয়ে এলো ।
--আমি বংশী, শিম্পাঞ্জী সেজে আছি । আগে অটো চালাতাম । এখন চিড়িয়াখানায় ১০টা ৫টা ডিউটি । মাস মাইনে ৫০০০ টাকা । সব কেটে কুটে হাতে পাই সাকুল্যে ১৫৭৫ টাকা । আর টিফিনটা তো তোমরা যা দাও, তাতেই হয়ে যায় । ছুটির দিনে একটু বেশী খাবার পেলে, বাড়ির ছেলে-মেয়ে বৌটার জন্যে নিয়ে যাই । ভালোই আছি । সামনে মাসে একটা ইনক্রিমেন্ট হবার কথা আছে । দেখি কতটা বাড়ে । দাও এখন, কি খাবার আছে তোমার কাছে । বড্ড খিদে পেয়েছে ।
আমি দৌড়ে পালিয়ে আসি ওখান থেকে । অজান্তে একবার নিজের গায়ে হাত বুলিয়ে নিই ... ।
---------------------------------------------------------------------------
Contributed by: 20150430 Aloke Chowdhury / 30 April 2015
No comments:
Post a Comment